পরীক্ষার পর অবসর সময় কাজে লাগানোর ৫ উপায়

0

 অবসর সময় কি করা উচিৎ বা অবসর সময়ে কি করা যায়?

আপনার স্কুল বা কলেজের পরীক্ষা কি শেষ? আপনি যদি ছাত্র হয়ে থাকেন তাহলে পড়ালেখার মাঝের কোন ছুটি আর কর্মজীবী হয়ে থাকলে কাজের মাঝের অবসর। যে ধরনের অবসর বা ছুটি হোক না কেন, আপনি অবসরে কি করতে চান তা ঠিক করতে দ্বিধায় পড়ে গেছেন? আমাদের অনেকের ক্ষেত্রে যা হয় তা হল অবসর সময়টা কীভাবে কাটাবো এটা ভেবে বের করতে করতে ছুটি শেষ!


তাই পড়ালেখা বা কাজের মাঝের অবসর দিন, সপ্তাহ এবং মাসগুলি কিভাবে ব্যয় করা যায় এবং একটু পরিকল্পনা করা থাকলে অবসরের এই কাজগুলো কীভাবে আপনার ভবিষ্যৎ জীবনকে পরিবর্তন করে দেবে তা নিয়েই এই লেখা।



1.ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেল অথবা ওয়েব সাইট

আপনার কি এমন কোন কাজে আগ্রহ আছে যা আপনি একান্ত সময়গুলোতে করতে চান বা করেন। কিন্তু বই খাতা বা কাজের সাথে যুদ্ধ করতে করতে আগ্রহের বা শখের কাজটি ঠিক ঠাক করা হয়ে ওঠে না। তাহলে আজই আপনি মনঃস্থির করুন এবং এই ছুটির সময়ে বা সারাদিনের কাজের অবসরে  শখের কাজটিতে সময় দিন। আপনার আগ্রহের বা শখের কাজটি হতে পারে ভ্রমণ, রান্না করা, শরীরচর্চা, পশুপাখীদের যত্ন নেওয়া, বাগান করা বা পোশাক ডিজাইন করা – যা ই হোক, আপনি আপনার কাজটি কোন ব্লগে বা ওয়েবসাইটে লেখা শুরু করুন অথবা ক্যামেরা বা মোবাইল দিয়ে ধারন করে ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করুন।

দ্বিতীয় ভাষা শিখুন

দেখবেন একদিন আপনার এই শখের কাজই আপনার বাড়তি আয় উপার্জনের চমৎকার একটা মাধ্যম হয়ে উঠবে। এই ডিজিটাল দুনিয়ায় মানুষ শুধু তাঁদের শখকে উপার্জনের উৎস বানিয়েছে এমন নজির আছে লক্ষ লক্ষ ।

তাছাড়া মানুষকে দেখানোর মত আপনার কাছে যদি অনেক ছবি থাকে বা কোন একটা বিষয়ের উপর আপনার আগ্রহ বা দক্ষতা থাকে, তবে আর দেরি না করে আজই শুরু করুন আপনার একটি ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট, ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেল? একটি সুন্দর দেখতে ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট / ইউটিউব চ্যানেল ভবিষ্যতে একটি সম্পদ হয়ে উঠবে, যেটা এই মুহূর্তে আপনার চিন্তাতেও নাই। আর ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরি করার জন্য আপনাকে অনেক কোডিং জানতে হবে না। আপনি ফ্রি ডোমেইন/হোস্টিং দিয়েই শুরু করতে পারেন ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট বা ব্লগ। অথবা চাইলে শুধু মাত্র ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনে এবং ফ্রি ওয়ার্ড প্রেস থিম দিয়েই শুরু করুন আপনার অনলাইনে পথচলা। কিছুদিন পরে নাহয় দেখে শুনে বুঝে এলিগেন্ট-থিম অথবা থিম-ফরেস্ট থেকে একটি প্রিমিয়াম থিম কিনে নিজের ওয়েবসাইটে নিয়ে আসবেন প্রফেশনাল লূক।

ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট বা ব্লগ অথবা ইউটিউব চ্যানেল কীভাবে শুরু করবেন তা জানার জন্য আপনাকে টাকা খরচ করে কোর্স করতে হবে না। শুধু গুগলে বা ইউটিউবে সার্চ করুন, দেখবেন হাজার হাজার মানুষ তাদের ওয়েব সাইটে বা ইউটিউব চ্যানেলে আপনার প্রশ্নের সব উত্তর আগেই দিয়ে রেখেছে।

2: ব্যক্তিগত আগ্রহের উপর কাজ করুন

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জীবনের অগ্রাধিকারগুলো স্বাভাবিকভাবেই পরিবর্তিত হতে থাকে। স্কুল কলেজে থাকাকালীন যে ব্যাপারগুলো আপনার ভালো লাগত, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এসে হয়তো সেটা একইরকম ভালো নাও লাগতে পারে। অনেকের কাছে হয়তো সে ভালো লাগাগুলো লাইফটাইম প্যাশন হয়ে যায়। অতএব অবকাশকালীন সময়ের জন্য সর্বোত্তম কাজ যা হতে পারে, তা নিজ নিজ আগ্রহ নিয়ে কাজ করা। 

লিখতে ভালবাসেন? কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ লেখা শুরু করে দিন। আপনি নাচের ক্লাসে অংশ নিতে পারেন, এমনকি অপরকে শেখাতে পারেন, গান চর্চা করতে পারেন। ইউটিউব এবং ফেসবুকে শেয়ার করে পেয়ে যেতে পারেন পরিচিতি। 

আপনি নবীন, এনার্জেটিক এবং মোটিভেটেড। জীবনে নতুন মাত্রা যোগ করার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর হয় না। উদাহরণস্বরূপ, এমা ওয়াটসনকে বিবেচনা করুন, যিনি তার অবকাশকালীন বছরটিতে লিঙ্গ সমতার জন্য স্ব-শিক্ষায় ব্যয় করেছিলেন। এটা তাকে তার (heforshe) নামক ক্যাম্পেইনে সোশ্যাল এক্টিভিস্ট হওয়ার ক্ষেত্রে ভিত্তি গড়ার কাজে সাহায্য করেছিল।


3:-অনলাইন ব্যবসা শুরু করুন

চলমান বৈশ্বিক মহামারিতে ই-কমার্স পূর্বের যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি এগিয়ে গেছে। বাড়িতে বসেই আপনি চাহিদা মাফিক পণ্য কিংবা সেবা হাতের কাছে পেয়ে যাচ্ছেন। সুতরাং আপনার কাছে যদি আকর্ষণীয় পণ্য বিক্রয় কিংবা সেবা দেওয়ার মতো আইডিয়া থাকে, তাহলে আপনিও কাজে নেমে পড়ুন। প্রাথমিকভাবে বন্ধু ও পরিজনদের কাছে প্রচারণার মাধ্যমে ছোট আকারে শুরু করে দিন। এতে আপনি যেমন আয় উপার্জনে সক্ষমতা অর্জন করবেন, তার সঙ্গে সেলস এবং ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে প্রাকটিক্যাল জ্ঞান শিখতে পারবেন।

আপনার ক্যারিয়ারের ভবিষ্যত পরিকল্পনায় যদি ব্যবসায় কিংবা উদ্যোক্তা হওয়ার মতো বিষয় থাকে, তাহলে আপনার জন্য এটি শুরু করার এখনই উপযুক্ত সময়। নিজ ব্যবসা ছাড়াও আপনি নিজ পারিবারিক ব্যবসায় সাহায্য করতে পারেন কিংবা স্থানীয় কোনো সংস্থায় ইন্টার্নশিপও করতে পারেন।

4. স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করুন

অবসর সময় কাটানোর আরেকটি দুর্দান্ত উপায় হল যে কোন একটি স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের সাথে যোগ দেয়া। কারণ স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করলে আপনার সামনে জীবনের নতুন দিগন্ত খুলে যাবে এবং আপনি জীবন সুধার গভীর থেকে রসাস্বাদন করতে পারবেন।

বন্ধু বান্ধব এবং পরিবার ছেড়ে আসা আপনার জন্য হয়তো কঠিন কাজ হবে, কিন্তু যদি পারেন তাহলে এটি সম্ভবত আপনার জীবনে সবচেয়ে ফলপ্রসূ অভিজ্ঞতা হবে। আপনি একটি নতুন জগৎ সম্পর্কে জানতে পারবেন, একটি নতুন জীবনধারা এবং জীবনের অর্থ খুজে পাবেন নতুন করে। আপনার ভাবনার জগত দ্রুত বড় হয়ে উঠবে এবং আপনি সত্যিকার অর্থে পরিপক্ক হবেন। স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে আপনি কোন ছিন্নমূল শিশুদের পড়ালেখা নিয়ে কাজ করতে পারেন অথবা চলে যেতে পারেন কোন প্রত্যন্ত গ্রামঞ্চলে অসহায় দুঃখী মানুষের ভাগ্য উন্নায়নে।

5:- দ্বিতীয় ভাষা শিখুন

আধুনিক বিশ্বে এখন সবকিছুই সহজলভ্য। মুহূর্তেই হাতের কাছে সবকিছুর রিসোর্স খুঁজে পাওয়া সম্ভব। তাহলে নতুন ভাষা শিখতে রিসোর্সগুলোর ব্যবহার কেন নয়! 

আপনি যদি বিদেশে পড়ালেখার বিষয়ে ভেবে থাকেন কিংবা অন্য কোনো দেশে জীবন গোছানোর কল্পনা করে থাকেন, তবে নতুন ভাষা শেখা একটি কার্যকরী উপায়। বহুভাষিক হয়ে উঠলে আপনার জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে অনেক দুয়ার খুলে যাবে, দিগন্তগুলো হবে বিস্তৃত। আপনার আত্মবিশ্বাস যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা মানুষের সঙ্গে আপনার নেটওয়ার্কিং গড়ে উঠবে, ফলে নতুন কিছুর সুযোগের সন্ধান আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে।

ভাষা শেখার প্ল্যাটফর্ম ‘বুসুউ’ অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা ইংরেজি বাদেও পাঁচটি ভাষা আপনার শিখে রাখা প্রয়োজন। সেগুলো হলো- আরবি, ফরাসি, জার্মান, হিন্দি এবং ম্যান্ডারিন। একটি নতুন ভাষা রপ্ত করা বেশ মজাদারও বটে। আপনি চাইলেই অবসর সময়ে ভিন্ন ভাষার সংগীত এবং সাবটাইটেল ছাড়া বিদেশি সিনেমা উপভোগ করতে পারবেন। 


Tags

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)
To Top